ইতিহাস

১০টি অতি প্রচলিত ধারনা যা সত্যি নয়

১০টি অতি প্রচলিত ধারনা যা সত্যি নয়১০টি অতি প্রচলিত ধারনা যা সত্যি নয়

আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক কথা শুনতে পাই যা লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে, কিন্তু তা সত্যি নয় আজ এমনই ১০ টি অতি প্রচলিত ধারনা সম্বন্ধে  আমরা জানব যা সত্যি নয়

মহাকাশ থেকে চিনের প্রাচীর

 

বলা হয় চাঁদ থেকে পৃথিবীর দিকে তাকালে মানুষের তৈরি করা একটাই জিনিষ দেখা যায়। চিনের প্রাচীর। বিলক্ষন মিথ্যা কথা। প্রায় চার লাখ কিলোমিটার দূরে থাকা চাঁদ তো দুর অস্ত, মাত্র কয়েকশ কিলোমিটার ওপর থেকেই চিনের প্রাচীর আরচোখে পড়ে না। এই ধারনাটির প্রচলন হয়েছিল কারন পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহের পরিখা গুলি পরিস্কার দেখা যায়। সতেরশ শতকের গোড়ায় সেই থেকে বেশকিছু বৈজ্ঞানিক বলতে শুরু করেন যে চিনের প্রাচীর নাকি চাঁদ থেকেও দেখা সম্ভব।অবশেষে মহাকাশচারীরা সেই ভুল ভেঙ্গে দেন। মহাকাশ থেকে রাতের পৃথিবীতে শহরগুলির আলোর অস্তিত্ব পরিস্কার বোঝা যায়। আমেরিকার উটা শহরে বিংহ্যামকপার মাইন, যা মানুষের তৈরি সর্ববৃহৎ খননকার্য বলে পরিচিত, সেটিও মহাকাশথেকে দেখা যায়।

লাল রঙ দেখলে ষাঁড় খেপে যায়।

 

ষাঁড়ের চোখের কোন কোষগুলি লাল রঙ আলাদা ভাবে চিনতে অক্ষম। পরীক্ষা করে দেখা গেছে ষাঁড়ের সামনে লাল, নীল এবং সাদা তিন ধরনেরই রঙের কাপড় নাড়ালেই সে একই রকম রেগে ওঠে। আসলে ষাঁড় তখনই আক্রমন করে যখন মানুষের আচরন ষাঁড়ের বিপদজনক মনে হয়।

একই জায়গায় দুবার বাজ পড়ে না

 

এটি একটি বহুল প্রচলিত অন্ধবিশ্বাস। আমেরিকার এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং-এ প্রতিবছর একশটির ওপরে বজ্রপাত হয়। বজ্রপাতের সম্ভাবনা নির্ভর করে পরিবাহী বস্তুর উপস্থিতি এবং মেঘ থেকে নুন্যতম দুরত্তের ওপর। কাজেই

একই জায়গায় বহুবার বজ্রপাত সম্ভব।
একই জায়গায় বহুবার বজ্রপাত সম্ভব।

মরচে থেকে টিটেনাস হয়

 

আংশিক সত্য। টিটেনাসকারি ব্যাকটেরিয়া অবাতশ্বসনকারি হওয়ায় মরিচা পড়া ধাতুতে এদের উপস্থিতি লক্ষণীয়। কিন্তু যেকোনো কাটা ঘা থেকেই টিটেনাসের সংক্রমণ সম্ভব। এমনকি কুকুরের কামড়ানো থেকেও টিটেনাস হতে পারে।

 

১০০ তলা বাড়ির ছাদ থেকে একটি কয়েন ঘাতক হতে পারে।

 

অনুসন্ধান করে দেখা গেছে একটি কয়েন যেকোনো উচ্চতার বহুতল থেকে পড়ার সময় তার প্রান্তিক গতিবেগ ৫০-৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টা হয়ে থাকে। এই গতিবেগে পড়ার ফলে মানুষের খুলি ভেদ করার মত শক্তি কয়েনটির থাকে না। কাজেই গাঁট্টা মারার মত বেদনাদায়ক হলেও কয়েন কিন্তু ঘাতক নয়।

হাঙরের ক্যান্সার হয় না

 

হয় এবং তার যথেষ্ট প্রমান মজুদ। ১৯৯২ সালে উইলিয়াম লেন নামক এক বৈজ্ঞানিক হাঙরের তরুনাস্থিকে ক্যান্সারের নিরামক বলে দাবি করেন এবং এই ভুয়ো খবর রটিয়ে দেন। এখনও অব্দি হাঙরের তরুনাস্থির ক্যান্সার নিরামক কোন ধর্মই প্রমান হয়নি উপরন্ত হাঙরের ২৩ রকমের ক্যান্সারের সন্ধান পাওয়া গেছে।

হাঙরের ক্যান্সার
হাঙরের ক্যান্সার

মানুষ শিম্পাঞ্জির বংশধর নয়

 

যদিও মানুষের সব থেকে কাছের জীবিত বংশধর হল শিম্পাঞ্জি কিন্তু শিম্পাঞ্জি থেকে আজকের মানুষ বিবর্তন হয় নি। আজ থেকে প্রায় ৪ কোটি বছর আগে মানুষ এবং শিম্পাঞ্জির পূর্বপুরুষ থেকে আলাদা ভাবে বিবর্তনের মাধ্যমে এই দুইপ্রজাতির জন্ম হয়েছে।

জেমস ওয়াট স্টিম ইঞ্জিন প্রথম বানান নি

 

১৭৬০ এর দশক থেকেই বিজ্ঞানি নিউকোমেন বাষ্পচালিত ইঞ্জিনের ব্যাবহার শুরু করেন। তার প্রায় কুড়ি বছর পর। বিজ্ঞানি জেমস ওয়াট সেই ইঞ্জিনের অংশবিশেষ পরিবর্তন করে তার কার্যকারিতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। বাণিজ্যিকভাবে জেমস ওয়াটের ইঞ্জিন সফল হওয়ায় তার নাম আবিস্কারক হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে।

মস্তিস্কের ১০% এর অনেক বেশি আমরা ব্যাবহার করি

 

১৮৯০ সালে সাইকোলজিস্ট উইলিয়াম জেমস বলেন মানুষের সম্পূর্ণ মানসিক অবস্থার মাত্র কয়েক শতাংশের ব্যাখ্যা আমরা পেয়েছি। তাঁর এই উক্তিটির অপব্যাখা করে উনিষস শতকে একটি মিথ সৃষ্টি হয় যার বক্তব্য মানুষ তাঁর মস্তিস্কের মাত্র ১০% ব্যাবহার করে। কোন এক নির্দিষ্ট সময়ে মানুষের মস্তিস্কের অল্প কিছু ভাগই ব্যাবহৃত হয় তা সত্যি কিন্তু নিউরোলজিস্টদের মতে সারা দিনে মস্তিস্কের ১০০ ভাগই ব্যাবহৃত হয়।

 

লাফিং বুদ্ধ গৌতম বুদ্ধ নন।

 

লাফিং বুদ্ধ চিনদেশের এক পল্লিকথার চরিত্র।তিনি গৌতম বুদ্ধেরও হাজার বছর পর জন্ম গ্রহন করেন। তিনি একজন মোটাসোটা সাধারন মানুষ যিনি বাচ্চাদের মধ্যে ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন তাঁর কাণ্ড কারখানার জন্য।

জানা অজানা তথ্য

Leave a Reply